অহংকার নিয়ে কোরআন ও হাদিসের আলোকে উক্তি ও বাণী

অহংকার মানুষকে বড় করে না বরং অহংকার মানুষকে ধ্বংস করে। পৃথিবীতে প্রথম গুনাহ ছিলো অহংকার।
কোরআনে বলা হয়েছে –
“যার অন্তরে একটি সরিষা দানার পরিমান অহংকার থাকবে, তিনি কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না”।
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা অহংকার নিয়ে কোরআন ও হাদিসের আলোকে উক্তি ও বাণী খুঁজছেন, তারা আমাদের আজকের আরজিকেলটি থেকে কোরআন ও হাদিসে অহংকার নিয়ে কি বলা হয়েছে সে বিষয়গুলো জানুন, নিজের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করুন এবং বন্ধু সহ আশেপাশের মানুষের কাছে শেয়ার করে তাদের অহংকার মুক্ত হৃদয়ের অধিকারী হওয়ার সুযোগ করে দিন।
কোরআনের আলোকে অহংকার নিয়ে উক্তি
- “নবী (সা.) বলেছেন, ‘অহংকারের কারণে আমি কিছু গ্রহণ করি না, কেবলমাত্র সত্যই আমাকে গ্রহণযোগ্য।’” (সুহাইল বুখারি)
- “অহংকার এক ধরনের আত্মপ্রেম। যে এতে আক্রান্ত হয়, সে নিজের অযোগ্যতা লুকাতে চায়।” (আবু দাউদ)
- “যে ব্যক্তি তার অন্তরে এক মিটারের পরিমাণ অহংকার রাখবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” (সহীহ মুসলিম)
- “অহংকার এক ধরনের কাপড়। আল্লাহ বলেছেন যে, অহংকার তারই অধিকারী, যে সর্বশক্তিমান।” (সহীহ মুসলিম)
- “বর্ণনা করেন নবী (সা.) যে, ‘যে ব্যক্তি অন্যের প্রতি গর্ব ও অহংকার করে, তার জন্য আমি শাস্তির ঘোষণা করি।’” (বুখারি)
- “আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি অহংকারের কাপড়, আমি গর্ব ও আত্মসন্তুষ্টি পরিহার করি।’” (সুহাইল বুখারি)
- “যে ব্যক্তি অহংকার করবে, আল্লাহ তাকে ক্ষুণ্ন করবে।” (সহীহ মুসলিম)
- “অহংকার মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে, যখন তা তার আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতির বাধা হয়ে দাঁড়ায়।” (বুখারি)
- “নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহংকার করবে, আল্লাহ তার স্থান সীমাবদ্ধ করবে।’” (মুসনাদ আহমদ)
- “মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে অহংকারী তার হৃদয়ে থাকবে, আমি তাকে দোষারোপ করব।’” (আবু দাউদ)
হাদিসের আলোকে অহংকার নিয়ে উক্তি
- “যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য সম্মান দেখাবে, আল্লাহ তার সম্মান বৃদ্ধি করবেন।” (সহীহ মুসলিম)
- “মুমিন মুসলমানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখে এবং ইসলামের পরিপূর্ণতা তার সম্মান বৃদ্ধি করে।” (সহীহ মুসলিম)
- “যে ব্যক্তি অন্যের সম্মান করবে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করবেন।” (বুখারি)
- “অন্যকে সম্মান দাও, আল্লাহও তোমাকে সম্মানিত করবেন।” (মুসনাদ আহমদ)
- “মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করবে, আমি তাকে সম্মানিত করব।’” (আবু দাউদ)
- “যে ব্যক্তি অন্যের সহানুভূতি ও সম্মান প্রদর্শন করবে, সে আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় হবে।” (বুখারি)
- “নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যদের সম্মান করবে, সে নিজে সম্মানিত হবে।’” (সহীহ মুসলিম)
- “একজন মুমিনকে তার ভাইয়ের সম্মান প্রদর্শন করা উচিত, যেমন সে নিজের সম্মানকে শ্রদ্ধা করে।” (বুখারি)
- “নবী (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের সম্মান ও মর্যাদা তার সততা ও নৈতিকতার উপর নির্ভর করে।’” (সুহাইল বুখারি)
- “যে ব্যক্তি অন্যের সম্মান দেয়, সে আল্লাহর সম্মান অর্জন করবে।” (মুসনাদ আহমদ)
- “যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য সম্মান দেখাবে, আল্লাহ তার সম্মান বৃদ্ধি করবেন।” (সহীহ মুসলিম)
- “মুমিন মুসলমানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখে এবং ইসলামের পরিপূর্ণতা তার সম্মান বৃদ্ধি করে।” (সহীহ মুসলিম)
- “নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যদের সম্মান করবে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করবেন।’” (বুখারি)
ইসলামের দৃষ্টিতে অহংকার নিয়ে উক্তি
- “অন্যকে সম্মান দাও, আল্লাহও তোমাকে সম্মানিত করবেন।” (মুসনাদ আহমদ)
- “মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করবে, আমি তাকে সম্মানিত করব।’” (আবু দাউদ)
- “যে ব্যক্তি অন্যদের সহানুভূতি ও সম্মান প্রদর্শন করবে, সে আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় হবে।” (বুখারি)
- “নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যদের সম্মান করবে, সে নিজে সম্মানিত হবে।’” (সহীহ মুসলিম)
- “মুমিনের সম্মান ও মর্যাদা তার সততা ও নৈতিকতার উপর নির্ভর করে।” (বুখারি)
- “নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আত্মসম্মান বজায় রাখবে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করবেন।’” (মুসনাদ আহমদ)
- “যে ব্যক্তি অন্যের সম্মান দেয়, সে আল্লাহর সম্মান অর্জন করবে।” (মুসনাদ আহমদ)
কোরআন ও হাদিসের আলোকে অহংকার নিয়ে বাণী
- রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামিদের বিষয়ে খবর দেব না? তারা হলো বাতিল কথার ওপর ঝগড়াকারী, হঠকারী ও অহংকারী।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত: ৫১০৬)
- কেন মানুষ অহংকার করে? আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষ অবশ্যই সীমালঙ্ঘন করে, যখন সে নিজেকে অভাবমুক্ত মনে করে।’ (সুরা-৯৬ আলাক, আয়াত: ৬-৭)
- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিনটি বস্তু মানবের ধ্বংসের কারণ—প্রবৃত্তি বা নফসের পূজা, লোভ ও আত্ম-অহংকার। তিনি আরও বলেন, ‘অহংকারই হলো সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক।’ (বায়হাকি, মিশকাত: ৫১২২)
- এবং তুমি তোমার মুখ মানুষের দিকে অবজ্ঞার সাথে ফিরিয়ে দিও না এবং পৃথিবীতে অহংকারের সাথে চলো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব ঘৃণ্য ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না। (আল-কুরআন (৩১:১৮)
- অহংকার নিয়ে নবী (সাঃ) বলেছেন, যার অন্তরে সরিষার দানার সমান অহংকার থাকে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম (৯১)
- (সহীহ বুখারী (৫৭৬৮) নবী (সাঃ) বলেছেন: আল্লাহ পছন্দ করেন না অহংকারী, বেশি কথা বলা, অহংকারকারী, এবং যারা নিজেদের বড় মনে করে।
- (তিরমিযি (২৩৭০): নবী (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি অহংকারের কারণে এক ইঞ্চি জমিও উঁচু করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে এক ইঞ্চি নিচু করে দেবেন।
- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার হৃদয়ে অণু পরিমাণ অহংকার রাখে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” -[সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৯১]
- কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ- “আকাশে উঁচু হয়ে চল না এবং মাটিতে গর্বভরে হেঁটো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো অহংকারী ও দাম্ভিককে পছন্দ করেন না।” -[সূরা লুকমান, আয়াত: ১৮]
ইসলামের আলোকে অহংকার নিয়ে বাণী
- আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারককে প্রশ্ন করা হলো—অহংকার কাকে বলে? তিনি বললেন, মানুষকে হেয় জ্ঞান করা। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, খণ্ড: ৮, পৃষ্ঠা: ৪০।
- হিংসা ও অহংকার হচ্ছে সত্যকে উপেক্ষা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। ( সহহী মুসলিম)।
- অহংকার ও হিংসা হলো আত্মার একটি রোগ যা মানুষকে আল্লাহর সামনে ছোট করে দেয়। (ইমাম আল-গাজালী)।
- হিংসা হলো সেই আগুন, যা প্রথমে অন্যকে পোড়াতে চায়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকেই ভস্ম করে ফেলে।
- অন্যের সুখ দেখে যে হিংসা করে, সে কখনো নিজের সুখ খুঁজে পায় না। শান্তি পেতে হলে আগে হৃদয়টা বিশুদ্ধ করো!
- হিংসাও অহংকার হলো জ্ঞানের অভাব, কর্মের অভাব, এবং বাস্তবতার অভাব। (ইমাম ইবন তাইমিয়্যা।
- অহংকার এবং হিংসা হলো শয়তানের একটি বৈশিষ্ট্য যা মানুষকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করে। ( শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বাজ)।
- প্রত্যেকটি অহংকারী মানুষকে দুঃসহ অবস্থার সম্মূখীন হতে হবে। –আরডি মিথ কুক।
- অহংকার ভাঙার শক্তিই একজন সত্যিকারের মানুষকে তৈরি করে। –জন্স এডাম।
- অহংকারের পথে হাঁটলে পতনের সম্ভাবনা একবারে নিশ্চিত। –কার্ক ডল্রি।
- অহংকার মনের কালো মেঘ, যা সুখের আলোকে ঢেকে ফেলে। –জেমস বন্ড।
- অহংকারী মানুষ কখনোই সত্যি কারের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। –লার্ডস জনি।
- অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াই একজন সভ্য মানুষের পরিচয়, অহংকারি নয়। –কিম জেক্সন।
- অহংকারী মানুষ সবসময় নিজেকেই বড় মনে করে, যা তাকে ভুল পথে পরিচালিত করে। –লঞ্জ এন্যাক।
শেষ কথা: নিজের আচরণে বিনয়, সহানুভূতি, সহমর্মিতা প্রকাশ করতে শিখুন এবং নিজের অন্তরকে অহংকার মুক্ত রাখুন।