হুমায়ুন আহমেদের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি, বাণী, স্ট্যাটাস, কবিতা ও উপন্যাস সমূহ

হুমায়ুন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের একজন জনপ্রিয় লেখক। তিনি প্রেম, ভালোবাসা ও সূক্ষ্ম অনুভূতি অত্যন্ত সংবেদনশীল ভাবে তুলে ধরেছেন তার লেখায়। তার লেখায় প্রেম কখনো সরল আবার কখনো জটিল রূপে প্রকাশ পায়। তিনি অনেক রোমান্টিক উপন্যাস লিখেছেন। আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা তুলে ধরেছি হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি, বাণী, স্টাটাস, কবিতা ও উপন্যাস সমূহ।

আপনারা যারা অনলাইনে বিভিন্ন প্লাটফর্মে অনুসন্ধান করে চলেছেন হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের বিখ্যাত উক্তিগুলো জানার জন্য। এবং হুমায়ূন আহমেদের প্রেম নিয়ে বিখ্যাত বাণী, স্ট্যাটাস, কবিতা সহ তার বিভিন্ন রোমান্টিক উপন্যাস সমূহের নাম জানার জন্য। তারা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি ফলো করুন। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি থেকে আপনারা আপনাদের অনুসন্ধান কৃত ফলাফল জানতে পারবেন এবং সংগ্রহ করতে পারবেন।

হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের বিখ্যাত উক্তি

❝ভোরবেলা মন ভালো থাকে, কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খারাপ হতে থাকে। বিকেলের দিকে মেজাজ থাকে সবচেয়ে খারাপ, আর সন্ধ্যার পর তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।❞  বই: তন্দ্রাবিলাস — হুমায়ূন আহমেদ

❝নারীদের দুঃখ প্রকাশের নয়, লুকিয়ে রাখার বিষয়।❞  বই: শঙ্খনীল কারাগার — হুমায়ূন আহমেদ

❝বড় বড় সমস্যার সমাধান সহজেই হয়। কিন্তু ছোট ছোট সমস্যার সমাধান করাটাই সবচেয়ে কঠিন।❞  বই: একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁঝিঁ পোকা — হুমায়ূন আহমেদ

❝বিত্তবানরা কল্পনা করতে পারেন না। বাস্তবের হিসাব-নিকাশে তারা এত ব্যস্ত থাকেন যে কল্পনার জগতে প্রবেশ করার সময়ই পান না। ধীরে ধীরে তাদের কল্পনার শক্তিও হারিয়ে যায়।❞  বই: বৃষ্টি ও মেঘমালা — হুমায়ূন আহমেদ

❝যারা কম বোঝে, তারাই পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী।❞  বই: তন্দ্রাবিলাস — হুমায়ূন আহমেদ

❝বসন্তের দিন কি সত্যিই চলে যায়? কিছুই তো হারিয়ে যায় না। এক বসন্তের বিদায়ের পর আরেকটি এসে দাঁড়ায়। স্বপ্নও ঠিক তেমনই, হারিয়ে যায়, আবার ফিরে আসে নতুন রূপে।❞  বই: চলে যায় বসন্তের দিন — হুমায়ূন আহমেদ

❝আমরা বলে থাকি, সব মানুষ সমান। কিন্তু বাস্তবে তা কখনো দেখা যায় না। কেবল মৃত্যুর দোরগোড়ায় এসে সবাই এক হয়ে যায়, সেখানে প্রধানমন্ত্রী আর ইট ভাঙা শ্রমজীবী নারীর মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।❞  বই: তোমাদের এই নগরে — হুমায়ূন আহমেদ

❝রাগলে মানুষের চোখ ছোট হয়ে আসে, আর আনন্দের মুহূর্তে চোখ হয় বড় বড়।❞  বই: হিমুর রূপালী রাত্রি — হুমায়ূন আহমেদ

❝পুরুষদের এক অদ্ভুত দুর্বলতা হলো, তারা ভাবে, সব নারীই তার প্রেমে পড়তে উন্মাদ হয়ে আছে।❞  বই: তোমাদের এই নগরে — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেমের ক্ষেত্রে ভাগ্যের সহায়তা পাওয়া যায় না। গল্প কিংবা সিনেমায় হয়তো দেখা যায়, কিন্তু বাস্তব জীবন গল্প নয়। জীবনের নায়িকারা নায়কদের রাস্তায় দেখলেও চিনতে পারে না।❞  বই: বহুব্রীহি — হুমায়ূন আহমেদ

❝তাৎক্ষণিকভাবে প্রেমে পড়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আর অতিরূপবতীদের প্রেমে পড়ারও দরকার নেই, কারণ নিয়ম অনুযায়ী অন্যরাই তাদের প্রেমে পড়বে।❞  বই: দেয়াল — হুমায়ূন আহমেদ

❝গভীর প্রেম মানুষকে নিয়ন্ত্রণের পুতুল বানিয়ে দেয়। কেউ প্রেমিকের হাতের পুতুল হয়, কেউ প্রেমিকার। তবে দুজন কখনো একসঙ্গে পুতুল হয় না। কে পুতুল হবে আর কে নিয়ন্ত্রণ করবে, তা নির্ভর করে মানসিক ক্ষমতার ওপর। যার মানসিক শক্তি বেশি, পুতুলের সুতো থাকে তার হাতেই।❞  বই: মিসির আলি! আপনি কোথায়? — হুমায়ূন আহমেদ

❝ছেলে আর মেয়ে বন্ধুত্ব করতে পারে, কিন্তু একসময় তারা একে অপরের প্রেমে পড়বেই। হয়তো ক্ষণিকের জন্য, হয়তো ভুল সময়ে, কিংবা দেরিতে। আর নাহয় আজীবনের জন্য।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝মাতাল হতে শুধুমাত্র মদের প্রয়োজন হয় না। কেউ ভালো কবিতা পড়ে মাতাল হতে পারে, কেউ অসাধারণ সুর শুনে মাতাল হতে পারে, আর কেউ প্রেমে পড়ে মাতাল হতে পারে।❞  বই: দিনের শেষে — হুমায়ূন আহমেদ

❝ভদ্র ছেলেদের প্রতি মেয়েরা প্রেম অনুভব করে না, বরং তাদের জন্য সহানুভূতি জন্মায়।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝কঠোর রক্ষণশীল পরিবারে হুট করেই প্রেম হয়ে যায়। এসব পরিবারের মেয়েরা সাধারণত ছেলেদের সঙ্গে মিশতে পারে না। কিন্তু হঠাৎ যদি সুযোগ ঘটে যায়, তাহলে তারা সহজেই প্রেমের ফাঁদে আটকে যায়।❞  বই: আকাশ জোড়া মেঘ — হুমায়ূন আহমেদ

❝একটি মেয়ের জন্য তোমার নিখুঁত হওয়ার দরকার নেই, কারণ মেয়েরা কখনো নিখুঁত ছেলেদের প্রেমে পড়ে না।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেমের প্রকৃতি আগুনের মতো। যেমন আগুন সবকিছু পুড়িয়ে ছাড়খার করে দেয়, তেমনি প্রেমও সবকিছু গ্রাস করে নেয়।❞  বই: তন্দ্রাবিলাস — হুমায়ূন আহমেদ

❝মানুষ যখন একা থাকে, তখন আসলে সে একা নয়। তার মনের ভেতরে বহু অদৃশ্য মানুষ তাকে ঘিরে রাখে। সত্যিকারের একাকীত্ব অনুভব করতে হলে অনেক মানুষের ভিড়ে থাকতে হয়, কারণ ভিড়ের মাঝেই প্রকৃত নির্জনতা লুকিয়ে থাকে।❞  বই: নক্ষত্রের রাত — হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের বিখ্যাত বাণী 

❝প্রেম ও যুদ্ধ কখনো পরিকল্পনামাফিক হয় না।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় কুসংস্কার হলো প্রেম।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

“যে মানুষ স্বপ্ন দেখতে জানে না, সে কখনো বড় কিছু করতে পারে না।”  — হুমায়ূন আহমেদ

❝মেয়েদের বোঝা সহজ নয়। যদি কেউ সত্যিই কোনো মেয়েকে পুরোপুরি বুঝতে চায়, তাহলে হয় সে পাগল হয়ে যাবে, নয়তো তার প্রেমে পড়ে যাবে।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রায় সবাই তার বিপরীত স্বভাবের মানুষের প্রেমে পড়ে।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেমে পড়া মানে কারো ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাওয়া। যার প্রেমে তুমি পড়বে, সে তোমার জীবনের বিশাল একটা অংশ দখল করে নেবে। আর যদি কোনোদিন সে তোমাকে ছেড়ে যায়, তাহলে সেই অংশটাও নিয়ে চলে যাবে, আর তুমি শূন্যতায় ডুবে যাবে।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝রাগ থেকে প্রেম জন্ম নেয়, ঘৃণা থেকেও প্রেম হয়। এমনকি অপমান কিংবা লজ্জা থেকেও প্রেমের জন্ম হতে পারে।❞  বই: হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী — হুমায়ূন আহমেদ

❝ইউনিভার্সিটির পুরানো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে, হাসি হাসি করে জিজ্ঞেস করা হয়— তারপর কি খবর ভালো আছেন? এখন কি করছেন? কলেজের পুরানো বন্ধুর সঙ্গে বলা হয়— আরে তুমি? কেমন আছো? আর স্কুল লেভেলের বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে— একজন আরেকজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে— তাই নিয়ম।❞  বই: হিমুর রূপালী রাত্রি — হুমায়ূন আহমেদ

❝বউ মানেই এক কোমল অনুভূতি— যেখানে স্বপ্ন আর কল্পনা মিলেমিশে একাকার।❞  বই: বাসর — হুমায়ূন আহমেদ

❝সুন্দরীদের হাতের লেখাও সুন্দর হয়— এটি যেন এক অমোঘ সত্য। তারা জানে, তারা সুন্দর। তাই তাদের চারপাশের সব কিছুতেই সৌন্দর্যের ছাপ রাখতে চায়।❞  বই: হিমুর রূপালী রাত্রি — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রত্যেক মানুষ একেকটা বইয়ের মতো। কেউ সহজ, কেউ কঠিন, আবার কারও হরফই বোঝা যায় না। কিছু বই পড়তে গেলে প্রথমে ভাষা বুঝতে হয়, আর কিছু বইয়ের পৃষ্ঠা একেবারে শূন্য—নিরব, রহস্যময়। আমার বইটা কেমন? হয়তো সহজ ভাষায় লেখা, কিন্তু সত্যিই কি সহজ? কারণ সরলতার মাঝেও লুকিয়ে থাকে অসীম জটিলতা।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝যাদের ঘরে কোনো আকর্ষণ থাকে না, তারা সন্ধ্যায় আর ঘরে ফিরতে চায় না। সেই সময়টায় তারা এক অদ্ভুত অস্থিরতায় ভুগতে থাকে।❞  বই: হিমু — হুমায়ূন আহমেদ

যে পাখি একবার উড়ে যায়, তাকে ফিরে আসতেই হয়। কিন্তু খাঁচায় বন্দি পাখির কোনো গন্তব্য থাকে না—তার ফেরারও প্রয়োজন হয় না।❞  বই: চলে যায় বসন্তের দিন — হুমায়ূন আহমেদ

❝মেয়েদের হাসি সুন্দর, কিন্তু তাদের হাসি চেপে রাখার সময়ের সৌন্দর্য আরও দশগুণ বেশি।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝পরম করুণাময় তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উপহার দিয়েছেন— তার কোলে আছে কোমল জোছনার মতো এক নিষাদ। আমার মতো সামান্য মানুষ তাকে কী দিতে পারি? আমি দিলাম মধ্যাহ্ন। তার কোলে জোছনা, মাথার ওপর মধ্যাহ্ন—মন্দ কি?❞  বই: মধ্যাহ্ন (অখণ্ড) — হুমায়ূন আহমেদ

❝ঘুমানোর আগে আয়নায় নিজেকে দেখার ইচ্ছে প্রায় সব তরুণীর মনেই জাগে।❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝রাতের ট্রেনে উঠলে তিথির মনে হয়— জীবনটা যদি শুধু ট্রেনে ট্রেনে কাটিয়ে দেওয়া যেত! তবে একা নয়, সঙ্গে কেউ একজন থাকাটা জরুরি। এমন কেউ, যার পাশে বসতে ভালো লাগে, যার কথা শুনতে ভালো লাগে। এমন কেউ, যে কথা বলতে বলতে হঠাৎ চোখ ফিরিয়ে নিলে মনে হবে চিৎকার করে বলতে, ‘তুমি চোখ ফিরিয়ে নিলে কেন? আর কখনো এমন করবে না!’❞  — হুমায়ূন আহমেদ

❝অল্পবয়সী মেয়েদের প্রেম আবেগনির্ভর হয়, যুক্তিনির্ভর নয়। তাদের চোখে কোনো অসুবিধা ধরা পড়ে না, তারা শুধু দেখবে মানুষের মানসিক শক্তি আর মানসিক সৌন্দর্য।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেম আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর যদি সেটা একতরফা হয়, তবে তার গুরুত্ব আরও বেশি।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝মেয়েদের এক ধরনের তৃতীয় নয়ন থাকে, যার মাধ্যমে তারা মুহূর্তের মধ্যে বুঝে যায় কেউ তাদের প্রেমে পড়েছে কি না।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ুন আহমেদের প্রেমের বিখ্যাত স্ট্যাটাস

❝ভালোবাসা আর ঘৃণা আসলে একই মুদ্রার দুই পিঠ। প্রেমিক-প্রেমিকার সামনে সেই মুদ্রা ঘুরতে থাকে। যাদের প্রেম যত গভীর, তাদের মুদ্রার ঘূর্ণন তত বেশি। একসময় মুদ্রা থেমে যায়—কখনও ভালোবাসা লেখা পিঠ ওপরে থাকে, কখনও ঘৃণা। তাই প্রেমের মুদ্রাকে সবসময় ঘুরতে দিতে হয়, ঘূর্ণন থামানো যাবে না।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেমের শক্তি কতটা প্রবল হতে পারে, তা প্রেমে না পড়লে বোঝা যায় না।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেম আর করুণা এক জিনিস নয়। প্রেমের প্রকৃতি সর্বগ্রাসী। আগুন যেমন সবকিছু পুড়িয়ে ফেলে, প্রেমও সবকিছু গ্রাস করে নেয়।❞  বই: তন্দ্রাবিলাস — হুমায়ূন আহমেদ

❝সাধারণ মেয়েরা ছালবাকলহীন, সাধারণ ছেলের প্রেমে পড়বে না। তারা খুঁজবে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, টাকা-পয়সা, ঢাকায় বাড়ি আছে কি না। কিন্তু অতি বিত্তবান মেয়েরা এসব ছেলেদের প্রতি করুণা অনুভব করবে, আর সেই করুণা থেকেই জন্ম নেবে প্রেম।❞  বই: তোমাদের এই নগরে — হুমায়ূন আহমেদ

❝ক্লাস টেনের মেয়েরা পাত্রী হিসেবে শ্রেষ্ঠ। কারণ এই বয়সে তারা প্রথমবার পুরুষের প্রতি কৌতূহলী হয় এবং প্রেম করতে চায়। বিয়ের পর তারা স্বামীকে হাতের কাছে পায়, তাই প্রথম প্রেমটাও হয় স্বামীর সঙ্গে। আর এই প্রেম দীর্ঘস্থায়ী হয়।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝যদি কোনো মেয়ে সত্যিকারের প্রেমে পড়ে, সে শুধু ছেলেটিকেই ভালোবাসবে না—তার চারপাশের সবকিছুর প্রতিও মুগ্ধতা জন্ম নেবে।❞  বই: দিঘির জলে কার ছায়া গো — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেম করার জন্য মেয়েরা স্মার্ট ছেলেদের খোঁজে, কিন্তু বিয়ের জন্য পছন্দ করে শান্ত-ভদ্র ছেলেদের। এই ছেলেদের পোশাক হয় পাজামা-পাঞ্জাবি, পায়ে স্যান্ডেল। তারা হাঁটে মাটির দিকে তাকিয়ে, লাজুক ভঙ্গিতে হাসে এবং নিজের স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকায় না।❞  বই: ছায়াবীথি — হুমায়ূন আহমেদ

❝মুজিবকোট শুধু বঙ্গবন্ধুকেই মানায়। বেঁটে কিংবা মোটারা এই কোট পরলে তাদের দেখতে পেঙ্গুইনের মতো লাগে।❞  বই: হিমুর নীল জোছনা — হুমায়ূন আহমেদ

❝মেয়েরা বিয়ের আগে কোনো পুরুষকে স্বামী হিসেবে কল্পনা করে আনন্দ পায় না। এমনকি প্রেমিককেও তারা বিয়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত স্বামী ভাবে না।❞  বই: কিছুক্ষণ — হুমায়ূন আহমেদ

❝ছেলে পাগলের চেয়ে মেয়ে পাগল অনেক বেশি ভয়ংকর।❞  বই: অপেক্ষা — হুমায়ূন আহমেদ

❝কল্পনায় দেখেছি নুহাশ পল্লীর সবুজের মাঝে ধবধবে সাদা শ্বেতপাথরের কবর। তার গায়ে লেখা থাকবে— ‘চরণ ধরিতে দিয়ো গো, আমারে নিয়ো না, নিয়ো না সরায়ে।’❞  বই: কাঠপেন্সিল — হুমায়ূন আহমেদ

❝গুণী মানুষের প্রেমে যুগে যুগে মেয়েরা পাগল হয়েছে। কারণ প্রকৃতি চায়, পুরুষের গুণ যেন পরবর্তী প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। মানবজাতির ভালো গুণগুলো যেন হারিয়ে না যায়, বরং ক্রমে পূর্ণ বিকাশ লাভ করে।❞  বই: রুমালী — হুমায়ূন আহমেদ

❝কিছু মানুষ মনে করে, নারীদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা শুধু সময়ের অপচয়। তাই তারা সে কাজটি করতেই চায় না।❞  বই: বীণার অসুখ — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রকৃতি যাকে দিতে চায়, তাকে উজার করেই দেয়। আর যাকে দিতে চায় না, তাকে কিছুই দেয় না। তাই একজন হয়ে ওঠে রবীন্দ্রনাথ, আরেকজন হয় ঠেলাগাড়ির চালক মুকাদ্দেছ।❞  বই: অপেক্ষা — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রত্যেক মানুষের ভেতরে কিছু আদিম ভয় লুকিয়ে থাকে। মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সেই ভয় নিজের ভেতরে বয়ে নিয়ে বেড়ায়। খুব কম সংখ্যক মানুষই সেই ভয়কে真正ভাবে মোকাবিলা করতে পারে।❞  বই: মৃন্ময়ী — হুমায়ূন আহমেদ

❝ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য হলেও পুরুষদের বিয়ে করা উচিত। কথায় আছে না— স্ত্রীভাগ্যে ধন।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝সব দলের মন্ত্রীরা একই রকম। তাদের মধ্যে কোনো গুণগত পার্থক্য নেই, আবার দোষের দিক থেকেও কেউ কম নয়। তাদের সঙ্গে গ্রাম্য বাউলদের মিল রয়েছে। যেমন বাউলরা বন্দনা ছাড়া মূল গান গাইতে পারে না, তেমনি মন্ত্রীরাও নেত্রীর বন্দনা ছাড়া কোনো বক্তব্য দিতে পারে না।❞  বই: কিছুক্ষণ — হুমায়ূন আহমেদ

❝পুরুষদের ভালোবাসা অনেকটা খেলার মতো—ভাবনা, আবেগ আর রোমাঞ্চ মিশ্রিত। কিন্তু মেয়েদের ভালোবাসা ভিন্ন, তারা এটাকে খেলা হিসেবে নেয় না। যখন একটি মেয়ে ভালোবাসে, তখন সেই ভালোবাসার সঙ্গে স্বপ্ন জুড়ে যায়—একটি ঘর, একটি সংসার, এবং সেই সংসারের মধ্যে এক শিশুর উপস্থিতি। পুরুষ যখন প্রেমে পড়ে, তখন সে কেবল তার প্রেমিকাকেই দেখে, কিন্তু একজন মেয়ে তার প্রেমের সঙ্গে গোটা ভবিষ্যৎ দেখতে পায়।❞  বই: সে আসে ধীরে — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেম সম্পূর্ণভাবে একটি জৈবিক বিষয়। এটিকে কোনো অলৌকিক কিছু ভাবার প্রয়োজন নেই।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝পৃথিবীর সব নারীদের মধ্যে এক ধরনের অলৌকিক ক্ষমতা থাকে। কোনো পুরুষ যদি তাদের প্রেমে পড়ে, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা বুঝতে পারে। কিন্তু পুরুষদের এই ক্ষমতা নেই। যদি কোনো মেয়ে তার কানেকাছে মুখ এনে বলে, ‘আমি প্রচণ্ড কষ্টে আছি, আমি মরে যাচ্ছি’, তাহলেও পুরুষ বুঝতে পারে না। সে ভাবে, মেয়েটির হয়তো এপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা হয়েছে।❞ — হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রেমের প্রকাশ ঘটে বিভিন্নভাবে, তার মধ্যে চুমু হলো অন্যতম। শুধু মানুষ নয়, পশুপাখিরাও চুমু খায়। বিড়াল, শিম্পাঞ্জি কিংবা আরও অনেক প্রাণী তাদের অনুভূতি প্রকাশের জন্য চুমু খেয়ে থাকে। এতে মন হালকা হয়ে যায়।❞  বই: লীলাবতী — হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস সমূহ

  • বাদশাহ নমদার
  • শঙ্খনীল কারাগার
  • আগুনের পরশমনি
  • মেঘ বলেছে যাবো যাবো
  • বাদশাহ নামদার
  • অপেক্ষা
  • নন্দিত নরকে
  • এইসব দিনরাত্রি

হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের বিখ্যাত ফেসবুক স্ট্যাটাস

❝যারা প্রচুর অর্থ উপার্জন করে, তারা কখনোই উপার্জন বন্ধ করতে পারে না। তাদের জন্য অবসর নেওয়া এক ধরনের অসম্ভব ব্যাপার।❞  বই: সেদিন চৈত্রমাস — হুমায়ূন আহমেদ

❝মানুষের আগ্রহকে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়।❞  বই: দরজার ওপাশে — হুমায়ূন আহমেদ

❝একজন খারাপ মানুষ খুব দ্রুত একজন ভালো মানুষকে প্রভাবিত করে খারাপ বানিয়ে ফেলতে পারে।❞  বই: শুভ্র — হুমায়ূন আহমেদ

❝সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে হলে একা বা দুইজন যথেষ্ট নয়, তিনজন লাগে। কারণ তিনজন থাকলেই পূর্ণতা আসে। Three is company.❞  বই: এই শুভ্র! এই — হুমায়ূন আহমেদ

❝অর্থ বোকা মানুষকেও বুদ্ধিমান বানিয়ে দেয়।❞  বই: হিমু — হুমায়ূন আহমেদ

❝ভালো কাজ করার জন্য বেশি ভাবার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু খারাপ কাজ করতে হলে মানুষ অনেক ভেবেচিন্তে করে।❞  বই: হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী — হুমায়ূন আহমেদ

❝তুমি কি জানো, তোমাকে আমি কতটা ভালোবাসি? জানো না, তাই তো? আমিও জানি না। যদি ভালোবাসা তরল পানির মতো কিছু হতো, তাহলে সেই ভালোবাসায় পৃথিবী ডুবে যেত, এমনকি হিমালয় পর্বতও।❞  বই: এপিটাফ — হুমায়ূন আহমেদ

❝মাঝেমধ্যে চিন্তার জগতে হারিয়ে যেতে হয়। কারণ এই জগতটিই সবচেয়ে রহস্যময়।❞  বই: হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী — হুমায়ূন আহমেদ

❝হে মানব সন্তান, তোমার ভালোবাসা গোপন রাখো। তোমার প্রিয়জনদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করো, যাতে তারা তোমার আসল অনুভূতি বুঝতে না পারে। কিন্তু দুর্জনদের সঙ্গে করো মধুর ব্যবহার। নিজেকে লুকিয়ে রাখার এটাই প্রথম পাঠ।❞  বই: হিমুর বাবার কথামালা — হুমায়ূন আহমেদ

❝ভালোবাসা হাততালির মতো, দুটো হাত না মিললে তালি বাজে না। একতরফা ভালোবাসায় কিছুই হয় না।❞  বই: রূপা — হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের কবিতা

 রাশান রোলেট

টেবিলের চারপাশে আমরা ছ’জন
চারজন চারদিকে ; দু’জন কোনাকুনি
দাবার বোড়ের মত
খেলা শুরু হলেই একজন আরেকজনকে খেয়ে ফেলতে উদ্যত ।
আমরা চারজন শান্ত, শুধু দু’জন নিঃশ্বাস বন্ধ করে বসে আছে ।
তাদের স্নায়ু টানটান।
বেড়ালের নখের মত তাদের হৃদয় থেকে
বেরিয়ে আসবে তীক্ষ্ম নখ ।
খেলা শুরু হতে দেরি হচ্ছে,
আম্পায়ার এখনো আসেনি।
খেলার সরঞ্জাম একটা ধবধবে সাদা পাতা
আর একটা কলম ।
কলমটা মিউজিক্যাল পিলো হাতে হাতে ঘুরবে
আমরা চারজন চারটা পদ লিখবো ।
শুধু যে দু’জন নখ বের করে কোনাকুনি বসে আছে
তারা কিছু লিখবে না ।
তারা তাদের নখ ধারালো করবে
লেখার মত সময় তাদের কোথায় ?
প্রথম কলম পেয়েছি আমি,
আম্পায়ার এসে গেছেন।
পিস্তল আকাশের দিকে তাক করে তিনি বললেন,
এ এক ভয়ংকর খেলা,
কবিতার রাশান রোলেট –
যিনি সবচে ভালো পদ লিখবেন
তাকে তৎক্ষণাৎ মেরে ফেলা হবে ।
আমার হাতে কলম কম্পমান
সবচে সুন্দর পদ এসে গেছে আমার মুঠোয়।

গৃহত্যাগী জোৎস্না

প্রতি পূর্নিমার মধ্যরাতে একবার আকাশের দিকে তাকাই
গৃহত্যাগী হবার মত জ্যোৎস্না কি উঠেছে ?
বালিকা ভুলানো জ্যোৎস্না নয়।
যে জ্যোৎস্নায় বালিকারা ছাদের রেলিং ধরে ছুটাছুটি করতে করতে বলবে-
ও মাগো, কি সুন্দর চাঁদ !
নবদম্পতির জ্যোৎস্নাও নয়।
যে জ্যোৎস্না দেখে স্বামী গাঢ় স্বরে স্ত্রীকে বলবেন-
দেখ দেখ নীতু চাঁদটা তোমার মুখের মতই সুন্দর !
কাজলা দিদির স্যাঁতস্যাতে জ্যোৎস্না নয়।
যে জ্যোৎস্না বাসি স্মৃতিপূর্ন ডাস্টবিন উল্টে দেয় আকাশে।
কবির জ্যোৎস্না নয়। যে জ্যোৎস্না দেখে কবি বলবেন-
কি আশ্চর্য রূপার থালার মত চাঁদ !
আমি সিদ্ধার্থের মত গৃহত্যাগী জ্যোৎস্নার জন্য বসে আছি।
যে জ্যোৎস্না দেখামাত্র গৃহের সমস্ত দরজা খুলে যাবে-
ঘরের ভেতরে ঢুকে পরবে বিস্তৃত প্রান্তর।
প্রান্তরে হাঁটব, হাঁটব আর হাঁটব-
পূর্নিমার চাঁদ স্থির হয়ে থাকবে মধ্য আকাশে।
চারদিক থেকে বিবিধ কন্ঠ ডাকবে- আয় আয় আয়।

 বাসর

কপাটহীন একটা অস্থির ঘরে তার সঙ্গে দেখা ।
লোহার তৈরি ছোট্ট একটা ঘর ।
বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কোন যোগ নেই ।
ঘরটা শুধু উঠছে আর নামছে ।
নামছে আর উঠছে ।
মানুষ ক্লান্ত হয় –
এ ঘরের কোন ক্লান্তি নেই।
এ রকম একটা ঘরেই বোধহয় বেহুলার বাসর হয়েছিল ।
নিশ্ছিদ্র লোহার একটা ঘর ।
কোন সাপ সেখানে ঢুকতে পারবে না ।
হিস হিস করে বলতে পারবে না, পাপ করো। পৃথিবীর সব আনন্দ পাপে ।
পুণ্য আনন্দহীন । উল্লাসহীন ।
পুণ্য করবে আকাশের ফিরিশতারা ।
কারণ পুণ্য করার জন্যেই তাদের তৈরি করা হয়েছে ।
লোহার সেই ঘরে ঢোকার জন্য সাপটা পথ খুঁজছিলো ।
সেই ফাঁকে বেহুলা তাঁর স্বামীকে বললেন, কি হয়েছে, তুমি ঘামছ কেন ?
আর তখন একটা সুতা সাপ ঢুকে গেলো।
ফিসফিস করে কোন একটা পরামর্শ দিতে গেলো ।
বেহুলা সেই পরামর্শ শুনলেন না বলেই কি লখিন্দরকে মরতে হল ?

তার সঙ্গে আমার দেখা কপাটহীন একটা অস্থির ঘরে ।
ঘরটা শুধু ওঠে আর নামে ।
আমি তাকে বলতে গেলাম – আচ্ছা শুনুন, আপনার কি মনে হচ্ছে না
এই ঘরটা আসলে আমাদের বাসর ঘর ?
আপনি আর কেউ নন, আপনি বেহুলা ।
যেই আপনি ভালবেসে আমাকে কিছু বলতে যাবেন
ওম্নি একটা সুতা সাপ এসে আমাকে কামড়ে দেবে ।
আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন । দয়া করে কিছু বলবেন না ।

সংসার

শোন মিলি।
দুঃখ তার বিষমাখা তীরে তোকে
বিঁধে বারংবার।
তবুও নিশ্চিত জানি,একদিন হবে তোর
সোনার সংসার ।।
উঠোনে পড়বে এসে একফালি রোদ
তার পাশে শিশু গুটিকয়
তাহাদের ধুলোমাখা হাতে – ধরা দেবে
পৃথিবীর সকল বিস্ময়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *